সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৬

মৌলভিবাজারের কমলগঞ্জ | ভ্রমণ | ফিরোজের লেখা

ফিরোজ শাহরিয়ার |



জাতীয় উদ্যান লাউয়াছড়া
দেশের ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট হিসেবে খ্যাত কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। বিনোদনের অন্যতম এ স্পটটি দেশের বনাঞ্চলের মধ্যে নান্দনিক ও আকর্ষণীয়। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়ায় দেখা মেলে বিভিন্ন বিরল প্রজাতির প্রাণীর। জানা যায়, ১৯২৫ সালে ১২৫০ হেক্টর জায়গা জুড়ে তৈরি করা প্লান্টেশনই এখনকার ঘন অরণ্যের রূপ নিয়েছে। ৭টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও ১০টি জাতীয় উদ্যানের একটি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশে অবশিষ্ট চিরহরিৎ বনের একটি হিসেবে টিকে আছে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে এই বনকে ্জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের জন্য এ বন বিখ্যাত। উল্লুক ছাড়াও এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ এবং উদ্ভিদ। নিরক্ষীয় অঞ্চলের চিরহরিৎ বর্ষাবন বা রেইন ফরেস্টের মতো এখানেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।

হামহাম জলপ্রপাত
গহীন অরণ্যের দুর্গম হামহাম জলপ্রপাত। ১৫০ ফুট পাহাড়ের উপর হতে স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ পানি আছড়ে পড়ছে বড় বড় পাথরের গায়ে। হামহাম জলপ্রপাত কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের কুরমা বনবিটের গহীন অরণ্যে। কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০কি.মি. পূর্ব-দক্ষিণে আয়তন ৭ হাজার ৯৭০ একর। এলাকার পশ্চিম দিকে চাম্পারায় চা বাগান, পূর্ব-দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত। এই বনবিটের প্রায় ৯ কি.মি. অভ্যন্তরে দৃষ্টিনন্দন এই হামহাম জলপ্রপাত। প্রায় ১০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পায়ে হেঁটে পৌঁছাতে হয় এই ‘ঝর্ণা সুন্দরী’র আঙ্গিনায়। নতুন সন্ধান পাওয়া রোমাঞ্চকর দৃষ্টিনন্দন হামহাম জলপ্রপাত এক নজর দেখার জন্য দিনদিন পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে।
মাধবপুর লেক
মাধবপুর লেক। নয়ন জুড়ানো এই লেক জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানের পাদদেশে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পাহাড়ি ও সমতল পথ পেরিয়ে চা বাগানের ভেতরে দেখা মিলে আকর্ষণীয় এই লেকের। ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন চা বাগানের ভেতরে মাধবপুর লেক নিজের রূপ দিয়েই দেশী-বিদেশী পর্যটকদের নয়ন কাড়ে। এ ছাড়া নয়নাভিরাম, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভ,গারোটিলা,খাসিয়া পুঞ্জি আর পুঞ্জিতে খাসিয়াদের চাষকৃত পানের বরজ ।
যাতায়াত
ঢাকা থেকে ট্রেনে কমলগঞ্জ ভানগাছ,শ্রীমঙ্গল স্টেশনে নামতে হবে। বাসে আসলে শ্যামলী, রূপসী বাংলা, এনা, সাদ্দাম পরিবহনে এসে শ্রীমঙ্গল নামতে পারেন। থাকার জন্য ফাইভ স্টার হোটেলসহ স্থানীয় উপজেলাগুলোতে অর্ধশতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টে ব্যবস্থা আছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...