বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সাক্ষাৎকার | তাহমিমা আনাম

tahmin anam
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মশিউল আলম
তাহমিমা আনাম প্রশ্ন: ২০০৭ সালে আপনার প্রথম উপন্যাস দ্য গোল্ডেন এজ প্রকাশের তিন বছর পর এ বছরের মে মাসে ইংল্যান্ড, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় একসঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে আপনার দ্বিতীয় উপন্যাস দ্য গুড মুসলিম। ঢাকার প্রথমা প্রকাশনও গত ২১ নভেম্বর উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে এবং এখন তা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। উপন্যাসটি সম্পর্কে কিছু বলুন।
তাহমিমা আনাম: আমার প্রথম উপন্যাস দ্য গোল্ডেন এজ তিন খণ্ডে পরিকল্পিত এক উপন্যাসলহরীর প্রথম খণ্ড। দ্বিতীয় খণ্ড হিসেবে বেরোল দ্য গুড মুসলিম।
তবে একটি গ্রন্থের কোনো খণ্ড বলতে যেমন অসম্পূর্ণ একটি অংশ বোঝায়, দ্য গোল্ডেন এজ বা দ্য গুড মুসলিম তেমন নয়। দুটোই স্বয়ংসম্পূর্ণ উপন্যাস। দ্য গোল্ডেন এজ পড়া না থাকলে দ্য গুড মুসলিম পড়ে বোঝা যাবে না বা রসাস্বাদন করা যাবে না—বিষয়টি এমন নয়। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় ট্রিলজি, দ্য গুড মুসলিম হচ্ছে তেমনই পরিকল্পিত ট্রিলজির একটি সিক্যুয়াল।
প্রশ্ন: দ্য গোল্ডেন এজ-এর বিষয়বস্তু ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, দ্য গুড মুসলিম-এর বিষয়বস্তুও কি তাই?
তাহমিমা আনাম: না। এই উপন্যাসে বর্ণিত ঘটনাগুলোর সময় মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে নব্বই দশকের শুরু পর্যন্ত। তবে এর প্রধান চরিত্রগুলোর কয়েকটি দ্য গোল্ডেন এজ-এরই চরিত্র। যেমন: রেহানা হক—একজন বিধবা মহিলা। তাঁর দুই সন্তান সোহেল ও মায়া—এদের সবাইকে দ্য গুড মুসলিম উপন্যাসেও দেখা যাচ্ছে। সোহেল ও মায়া দুজনেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। সোহেল ছিল একজন গেরিলা যোদ্ধা, আর মায়া স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিল পশ্চিমবঙ্গের শরণার্থী শিবিরগুলোতে। দ্য গুড মুসলিম-এর গল্পটা শুরু হয়েছে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরপরই। সোহেল ও মায়া যুদ্ধ থেকে ফেরে, কিন্তু যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতিগুলো তাদের তাড়া করে ফেরে। বিশেষ করে, সোহেল তার যুদ্ধকালের স্মৃতি দ্বারা ভীষণভাবে তাড়িত হয়। কিন্তু যুদ্ধের পরে তার জীবন বদলে যেতে শুরু করে; এবং ভীষণভাবেই বদলে যায়। মায়া যুদ্ধের সময় সম্পূর্ণ স্বাধীন একটা মেয়ের মতো কাজ করেছে; সে অ্যাম্বুলেন্স চালিয়েছে, চিকিৎসকদের সহযোগিতা করেছে। যুদ্ধের পরে সে তার সেই আদর্শ ধরে রাখতে চায়। সে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়, গ্রামে গিয়ে চিকিৎসাকেন্দ্র খোলে, গ্রামীণ নারীদের সেবা করে।
প্রশ্ন: সোহেলের জীবন কেন বদলে যায় বা বদলে গিয়ে কেমন হয়? তার সংকটগুলো কী?
তাহমিমা আনাম: যুদ্ধের পরের দিনগুলোতে অনেকগুলো ঘটনা ও বিষয় একসঙ্গে মিলে সোহেলের মনোজগতে কিছু সংকট সৃষ্টি করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার সামনে ছিল বিরাট বড় একটা লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সে যুদ্ধ করেছে, অনেক কিছু দেখেছে। তারপর যুদ্ধ শেষ হলে সে ভেবে পায় না, জীবনটাকে নিয়ে সে কী করবে, তার জীবনের লক্ষ্য কী?
প্রশ্ন: কেন এ রকম ঘটে? মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি বলে? যুদ্ধ-পরবর্তী দেশের অরাজক অবস্থা দেখে?
তাহমিমা আনাম: সোহেলের জীবনে অনেকগুলো ঘটনা ঘটে। যেমন, সে একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে; কিন্তু মেয়েটির সঙ্গে তার বিয়ে হয় না। এটা নিয়ে তার মনে গভীর বিষাদ সৃষ্টি হয়; দেশের পরিস্থিতিও তাকে উৎসাহিত করতে পারে না। সব মিলিয়ে সে জীবনের অর্থ হারিয়ে ফেলে। একটা গভীর মনস্তাত্ত্বিক সংকটে পড়ে যায় সে। এ রকম অবস্থায় যা হয়, সে খুঁজতে থাকে জীবনের মানে এবং ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়ে; ধর্মকে শেষ অবলম্বন হিসেবে পেয়ে যায়। তার মধ্যে যখন এই পরিবর্তন ঘটে, তখন তার বোন মায়ার সঙ্গে একটা দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। মায়া সোহেলকে বলে, ‘আমরা তো ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, তুমি কেন ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়লে?’ সোহেল তখন বলে, ‘তুমি আমাকে কেন বাধা দিচ্ছ? আমি তো ধর্মের কাছে শান্তি পাচ্ছি।’ এ নিয়ে দুই ভাইবোনের মধ্যে বড় রকমের দ্বন্দ্ব ঘটে। পুরো গল্পটা আমি এখনই বলে দিতে চাই না।
প্রশ্ন: আপনার জন্ম তো মুক্তিযুদ্ধের পরে, তারপর আপনি দীর্ঘ সময় বাস করেছেন বাংলাদেশের বাইরে। মুক্তিযুদ্ধ একটা বিরাট ঐতিহাসিক বিষয়। এটা নিয়ে কাজ করাটাকে কি আপনার কাছে চ্যালেঞ্জ বলে মনে হয়নি?
তাহমিমা আনাম: আমি সব সময় বলি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমি যা লিখেছি, তা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে হাজারো গল্পের মধ্যে একটি। এমন যদি হতো যে মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র গল্পটিই আমি লিখব, তাহলে সেটা হতো ভয়ংকর একটা ব্যাপার। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গল্পের শেষ নেই। বাংলায় এত ভালো ভালো উপন্যাস লেখা হয়েছে, ইংরেজিতে লেখা হয়নি। আমি একটি লিখলাম, এটিই শেষ নয়। আমার পরে আরও অনেকে লিখবেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের গল্পের ভান্ডার অফুরান। সেই অফুরান ভান্ডার থেকে একটি গল্প আমি তুলে এনে হাজির করেছি ইংরেজি ভাষায়। মুক্তিযুদ্ধ একটা বিরাট বিষয়। কিন্তু আমি যে গল্পটি লিখেছি, সেটি খুবই নিবিড় একটি পারিবারিক গল্প। একটি পরিবার মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতাগুলোর মধ্য দিয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধ ও তার পরবর্তী সময় সে পরিবারের মানুষগুলোর ওপর কী অভিঘাত রেখে গেছে—সেই গল্প বলার চেষ্টা করেছি আমি।
প্রশ্ন: যে যুদ্ধ আপনি দেখেননি, যে সময়ের অভিজ্ঞতাগুলোর মধ্য দিয়ে আপনি যাননি, সেই সময়ের কাহিনি-উপন্যাসের মতো বড় পরিসরে বলার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি ও শিল্পীসুলভ আস্থা প্রয়োজন, তা আপনি পেয়েছিলেন কীভাবে?
তাহমিমা আনাম: মুক্তিযুদ্ধের গল্প আমার কাছে নতুন কিছু নয়। জন্মের পর থেকে মা-বাবার কাছে আমি মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনে এসেছি। যত শুনেছি, ততই আগ্রহ বেড়েছে; এবং উপন্যাস লেখার প্রস্তুতির সময় খুব আগ্রহের সঙ্গে গবেষণা করেছি। ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলে কথা বলেছি অনেক মানুষের সঙ্গে, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। অনেকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা লিখেছেন, সেগুলোর কিছু কিছু পড়েছি। অনেকে স্মৃতিকথা লিখেছেন, কিন্তু এখনো প্রকাশ করেননি—এমন কিছু স্মৃতিকথাও পড়ার সুযোগ আমার হয়েছে। মা-বাবার কাছে শোনা গল্প ছিল আমার মূল প্রেরণার উৎস। কিন্তু আমি যখন সিদ্ধান্ত নিলাম যে একটা উপন্যাস লিখব, তখন সিস্টেম্যাটিক্যালি আমাকে গবেষণা করতে হয়েছে। সে জন্য বাংলাদেশে এসে দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়েছে।
প্রশ্ন: মাতৃভাষায় যাঁরা কথাসাহিত্য রচনা করেন, তাঁদের মনের মধ্যে থাকেন স্বদেশি পাঠক, কাহিনি ও ঘটনার পটভূমি যাঁদের জানা। এ নিয়ে লেখককে আলাদাভাবে চিন্তা করতে হয় না। কিন্তু আপনি বাংলাদেশের মানুষের গল্প লিখছেন ইংরেজি ভাষায়, অর্থাৎ আপনার মনের মধ্যে যে পাঠক, সে ইংরেজি ভাষাভাষী মানুষ; সে হয়তো বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছুই জানে না। তার জন্য বাংলাদেশের গল্প লিখতে গিয়ে আপনি কোনো ধরনের সমস্যা বোধ করেন কি না?
তাহমিমা আনাম: আমরা কিন্তু অনেক জনগোষ্ঠীর গল্প পড়ি। তাদের ইতিহাস-সংস্কৃতি, আর্থসামাজিক বা রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে আমাদের যদি কোনো ধারণা না-ও থেকে থাকে, তবু আমরা তাদের গল্প বুঝতে পারি। নাইজেরিয়া বা ক্যারিবীয় কোনো দেশের গল্প-উপন্যাস পড়ে বুঝতে, রসাস্বাদন করতে আমাদের কোনো কষ্ট হয় না। এর কারণ, মানবীয় কতগুলো ব্যাপার থাকে, যা সব দেশ-কালকে অতিক্রম করে যায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গল্প বা তার পরবর্তী সময়ে গল্প লিখতে গিয়ে আমার প্রধান লক্ষ্য ছিল সেই মানবীয় ব্যাপারগুলো তুলে আনা, যা সব দেশের, সব সংস্কৃতির মানুষ বুঝতে পারবে। দ্য গোল্ডেন এজ বা দ্য গুড মুসলিম উপন্যাসের কাহিনি নাইজেরিয়া বা ক্যারিবীয় কোনো দেশের পাঠক বা সাধারণ অর্থে পৃথিবীর যেকোনো দেশের পাঠক বুঝতে পারবে সেই মানবীয় উপাদানগুলো থেকেই। কেউ হয়তো এই কাহিনির সঙ্গে নিজেকে রিলেট করবে মা হিসেবে, কেউ ভাই হিসেবে, কেউ বোন হিসেবে। এই মানবিক সম্পর্কগুলোর ভৌগোলিক বা সংস্কৃতিগত কোনো সীমারেখা নেই। সময়ের বিচারেও তা চিরন্তন। নইলে, দৃষ্টান্তস্বরূপ, প্রাচীন গ্রিসের নাটক আমরা এই কালের, ভিন্ন এক ভাষা-সংস্কৃতির মানুষ হয়ে কী করে উপভোগ করি? উনিশ শতকের রাশিয়ায় না গিয়েও, রুশ-সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনো ধারণা ছাড়াই কী করে উপভোগ করি তলস্তয়ের আনা কারেনিনার কাহিনি? কথাশিল্পী তো ইতিহাস বা সমাজতত্ত্ব রচনা করেন না; তাঁর কাজ হিউম্যান ড্রামা নিয়ে, যা সর্বজনীন।
প্রথম আলো: আপনি নৃতত্ত্ব পড়েছেন। এ বিষয়ে পিএইচডিও করেছেন, কিন্তু নৃতত্ত্ববিদ না হয়ে আপনি কেন এবং কী করে কথাশিল্পী হয়ে উঠলেন?
তাহমিমা আনাম: এ প্রশ্নের খুব সোজা একটা উত্তর আমি দিতে পারব। কারণ, খুব ছোটবেলা থেকেই আমার মা-বাবা আমাকে বলেছেন, তুমি লেখক হবে। অন্যদের মা-বাবারা বলেন, তুমি চিকিৎসক হবে, তুমি ব্যারিস্টার হবে। কারণ হয়তো এই যে, এ পেশাগুলো আর্থিক বিবেচনায় নিরাপদ। কিন্তু আমার মা-বাবা সব সময় আমাকে বলেছেন, তুমি লেখক হবে। আমার দাদা [আবুল মনসুর আহমদ] ছিলেন সাহিত্যিক, আমার বাবা সাংবাদিক। তাই আমাদের পরিবারে এটা খুব স্বাভাবিক একটা প্রত্যাশা ছিল যে আমি লেখক হব। আমিও তাই ভেবেছি, আমি লেখক হব। দেখা যাক, কী ঘটে।
প্রথম আলো: আপনি ছোটবেলায় কী ধরনের বই পড়তে পছন্দ করতেন?
তাহমিমা আনাম: আমার ছোটবেলা কেটেছে বিদেশে। সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদার গল্প আমি খুব পছন্দ করতাম। সত্যজিৎ রায়ের অন্য লেখাগুলোও আমার পছন্দ। বড় হতে হতে রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছ পড়েছি। বাঙালি লেখকদের মধ্যে মহাশ্বেতা দেবীর লেখা আমার খুব ভালো লাগে। সেলিনা হোসেনের লেখাও ভালো লাগে। আর ইংরেজি লেখকদের মধ্যে তো অনেক…।
প্রথম আলো: কারা?
তাহমিমা আনাম: আমি পছন্দ করি জেন অস্টেন, শার্লট ব্রন্টি…। ভারতীয় লেখকদের মধ্যে সালমান রুশদি, অমিতাভ ঘোষ আমার খুব প্রিয়। খুব পছন্দ করি রোহিন্থন মিস্ত্রির লেখা…।
প্রথম আলো: আমেরিকান ঔপন্যাসিক ফিলিপ রথ?
তাহমিমা আনাম: পড়েছি, কিন্তু তিনি আমার প্রিয় নন।
প্রথম আলো: কুর্ট ভোনেগাট?
তাহমিমা আনাম: তরুণ-যুবকদের খুব পছন্দ কুর্ট ভোনেগাট, ফিলিপ রথ…।
প্রথম আলো: আর আর্নেস্ট হেমিংওয়ে?
তাহমিমা আনাম: পড়েছি, কিন্তু তিনি আমার প্রিয় লেখকদের অন্তর্ভুক্ত নন।
প্রথম আলো: তাহলে আর?
তাহমিমা আনাম: দক্ষিণ আমেরিকার লেখক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের লেখা পড়েছি অনেক। আর ফরাসি লেখকদের মধ্যে খুব পছন্দ করি আলবের কামুকে। আমি তো ছোটবেলায় ফ্রান্সে ছিলাম। ফরাসি ভাষায় স্বচ্ছন্দে কথা বলতে ও পড়তে পারি। আমেরিকান ঔপন্যাসিকদের মধ্যে স্কট ফিটজেরাল্ড, টনি মরিসন, আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলের লেখক ফ্ল্যানারি ও’কনোরকে আমার খুব পছন্দ। আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চল ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক মিল আছে—গরম, খুবই আর্দ্র জলবায়ু আর মানুষগুলো বেশ দরিদ্র।
প্রথম আলো: উনিশ শতকের রুশ উপন্যাস?
তাহমিমা আনাম: তলস্তয়ের আনা কারেনিনা আমার খুব পছন্দ। গোগলের গল্পও পড়েছি।
প্রথম আলো: দ্য গুড মুসলিম কি শুধু ইংরেজি ভাষাতেই বেরিয়েছে?
তাহমিমা আনাম: না, ইংরেজিতে প্রকাশের কিছু সময় পরই ইতালীয় ভাষায় বইটি অনূদিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে। আমার প্রথম বইটি ইতালিতে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। তাই আমার ইতালীয় প্রকাশক এ বইটি ইংরেজিতে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইতালীয় ভাষায় অনুবাদ করিয়ে মে মাসেই প্রকাশ করেছেন। আগামী জানুয়ারিতে ফরাসি ভাষায়, তারপর জার্মান, স্প্যানিশ ও পর্তুগিজ ভাষায় বইটি প্রকাশিত হবে। আরও কিছু ভাষায় এটি অনূদিত হবে।
প্রথম আলো: আপনি বলছেন, একটি উপন্যাসত্রয়ী বা ট্রিলজির দ্বিতীয় খণ্ড হিসেবে বেরোল দ্য গুড মুসলিম। এবং আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই উপন্যাসের উপজীব্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী এক-দেড় দশকের বাংলাদেশের জীবন। তৃতীয় খণ্ডটির বিষয়বস্তু কী হবে?
তাহমিমা আনাম: যেহেতু ট্রিলজি, তাই প্রধান কুশীলব তারাই থাকবে, যাদের দেখা যাচ্ছে দ্য গুড মুসলিম উপন্যাসে। এবার আমি তুলে ধরার চেষ্টা করব নব্বই দশক ও তার পরবর্তী সময়ে ওই পরিবারের অভিজ্ঞতাগুলো। এ বিষয়ে বিশদভাবে বলার সময় এখনো আসেনি। কারণ, চিন্তাভাবনা ও প্রস্তুতি সবে শুরু হয়েছে। তবে একটি বিষয় বলতে পারি, এই পর্বে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব-প্রতিক্রিয়াগুলো বিবেচনায় থাকবে।
প্রথম আলো: প্রথম আলোকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
তাহমিমা আনাম: প্রথম আলো এবং তার পাঠকদের অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...