সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৬

ভালবাসার অন্য পাশে | ফিরোজের লেখা

ফিরোজ শাহরিয়ার|

জীবনটা প্রতিনিয়তই বদলে যাচ্ছে। দেখতে দেখতে তো বেশ খানিকটা পথ চলে এসেছি। বদলে যাওয়া এ জীবনের অর্থ খুজে দেখেছি অনেকবার, কিছুই পাইনি আমি। ভালবাসার খুব নিকট দিয়ে চলে গেছি শুধু ছুঁয়ে দেখতে পারিনি। শুনেছি মানুষের মাঝেই নাকি মানুষের বাস, এক পলক চোঁখ বন্ধ করলেই তাকে খুজে পাওয়া যায়। কতবার চেষ্টা করেছি, কিছুই খুঁজে পাইনি। জীবনের মাঝখানে থেকেও জানতে না পারার অপূর্ণতা আমাকে কুরে কুরে খাই। ভালবাসতে না পারার ব্যর্থ চেষ্টাগুলো বার বার আমার চোঁখে ধরা দেয়। ভাষাহীন মুখ আর গুমরে কেঁদে যাওয়া মুহূর্তগুলো এসে ধরা দেয় প্রতিনিয়ত।
খুব ছোট্টবেলাই নানীজানের কাছে গল্প শুনতাম। পলকহীনভাবে তার ভাষা আয়ত্ত করার চেষ্টা করতাম। খুবই ভাল লাগতো। সারাদিন টৈ টৈ করে ঘুরে কখন সন্ধ্যা নেমে আসতো বুঝতেই পারতাম না। খুব নিশ্চুপ পা ফেলে ফেলে বাড়ীতে আসতাম, ঠিকি আব্বুর হাতে ধরা পড়ে যেতাম। অনেক বকাঝকা তারপর ওয়াদা কাল হতে আর বাইরে যাবনা। আম্মু এসে চোঁখের জলগুলো মুছে দিয়ে বলতো পাগল সোনাটা আমার, এত কাঁদতে হয়? আম্মুর কথায় হেসে দিতাম। সব দুঃখ কষ্টগুলো মুছে যেত। হাতমুখ ধুয়ে পড়তে বসা, তারপর ঘুম, আবার সকাল। সব ভুলেগিয়ে ঠিকি আগের দিনটির মত হয়ে যেতাম।
ছোটমামার হাত ধরে প্রথম যেদিন গুটিগুটি পায়ে স্কুলে গিয়েছিলাম, খুব বিচিত্র্য অনুভুতি হয়েছিল সেই দিন। খুব পা কাঁপছিল, অনেক ভয় পেয়েছিলাম। সেই ভয় পাওয়া থেকেই শুরু। জীবনের আজ পর্যন্ত এই ভয়টা খুব করে কাজ করে। আমি কি কোন ভুল করলাম, আমার কি এই কাজটা করা উচিত হয়েছে? কোন প্রশ্নের উত্তর ঠিকভাবে খুজে পাইনা আমি।
যেদিন প্রথম একটি মেয়ে আমার সাঁদা জামার পকেটের ফাঁকে একটি চিরকুট ভরে দিয়েছিল, ভীষণ হাসি পেয়েছিল সেদিন। আজ অনেকটা দিনপর যখন এই ব্লগে আমি লিখছি, হয়তোবা তার চোঁখো পড়ে যাবে আমার লেখাটার উপর। তাকে চুপি চুপিই বলবো, হাসবেনা প্লিজ। সেদিনের সেই অনুভুতির কথাগুলো একান্তই তোমাকেই উত্‍সর্গ করলাম।
তবে বাস্তব খুব সত্য আর নির্মম। আজ কতদুরে শুধু তুমিই না, আরো অনেকেই। জীবনের পথগুলো খুব গভীর ভাবে আঁকাবাঁকা করা। শত চেষ্টার ফলেও আজ অনেক কিছুকেই দেখতে পাইনা। হয়তো তোমাদের জীবনটাও এরকম। দার্জিলেং এর রাস্তায় যখন তোমরা ঘুরে বেড়াও, আর আমি তখন ব্যস্ত শহরে অলস হয়ে ল্যাপটপের বোতাম টিপি। যাক, অনেকগুলো কথা তোমাকে নিয়ে লিখে ফেললাম। মনে কিছু করনা। প্রিয় পাঠক আপনারা আবার ভাববেননা তার সাথে আমার প্রেম টেম কিছু ছিল।
অনেক কথার ফাঁকদিয়ে একটি কথা খুব মনে পড়ছে। মধু চাচার আম বাগানের কথা। একবারতো আমরা সবাই মিলে অনেকগুলো আম চুরি করেছিলাম। আব্বু খুব বকেছিল সেবার। আম্মু এসে বলেছিল, এমন কাজ আর করবিনা কখনো। কানে ধরেছিলাম আর কখনো করিওনি।
একটু একটু করে পথ চলতে চলতে আজ বেশ খানিকটা দুরে। তবে স্মৃতির ক্যানভাস থেকে অনেক স্মৃতিকেই মুছে ফেলা যায়না। অনেক কিছুর মাঝেই বন্দি হয়ে যায় মন। তখন আর কোন কিছুকেই যেন আর ভাল লাগেনা। মনের ছেড়া পাতার ডাইরী গুলো ঘাটলে নিজের কাছেই যেন হেরে যেতে হয়। বাঁশ বাগানের মাথার উপর আঁধফালি চাঁদ আর শ্রাবণের শেষরাত্রের বৃষ্টিগুলো এখনো আমাকে ভিজিয়ে দিয়ে যায়। কৃত্রিম শহরের বুকচিরে যতদুরেই হেটে যায়না কেন খুজে পাইনা কাওকেই। কেও এনে দেয়না আমাকে সেই হাসনাহেনার সুবাস। রংধনুর রং থেকেও বৃষ্টি ঝরেনা আর। খুব আপন সুরে বলতে আসেনা কেও মমতার কথাগুলো। নিজের কাছেই তাই বার বার হেরে যায় আমি!
লেখাটি এখান থেকেও পড়তে পারেন-http://www.amrabondhu.com/firoz/3183

1 টি মন্তব্য:

  1. আপনার ব্লগের লেখা পড়লাম ভালো লাগলো। আপনি ভালো লিখতে পারেন। আপনার মত যারা লিখতে ভালোবাসেন তারা lekhok.club এ লিখতে পারেন।

    উত্তরমুছুন

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...