বীজগাণিতিক রাশিঃ
প্রক্রিয়া চিহ্ন সংখ্যানির্দেশক অক্ষর প্রতিক এর অর্থবোধক বিন্যাসকে বীজগাণিতিক রাশি বলে । যেমন 2a+3b-4c একটি বীজগাণিতিক রাশি ।
একটি বীজগাণিতিক রাশি তে ধনাত্মক, ঋণাত্ম্ গুণ, ভা্ সমান চিহ্ন, ইত্যাদি থাকে এবং চলক ও ধ্রুবক থাকে ।
চলক(Variables): বীজগাণিতিক রাশিতে যে উপাদান গুলোর মান নির্দিষ্ট না মান এর পরিবর্তন হয় যেমন উপরের উদাহরনে a , b ও c এদের মানের পরিবতন হয় । তাই এদের চলক বলে ।
বীজগাণিতিক সূত্রাবলিঃ
বীজগাণিতিক প্রতিক দ্বারা প্রকাশিত যেকোনো সাধারণ নিয়ম বা সিধান্তকে বীজগাণিতিক সুত্র বলা হয় ।
সুত্র ১ । 
সুত্র ২ । 
এই দুটি বর্গের সুত্র থেকে কিছু অনুসিধান্ত প্রমাণ করা যায় যেমনঃ
১ । 
২ ।
অথবা 
সুত্র এক ও দুই থেকে খুব সহজেই এই অনুসিধান্তগুলো প্রমাণ করা যায়
সুত্র ১ থেকে পাই
বা, 
আবার প্রথম সুত্র থেকে পাই
বা, 
বা, 
আবার
অনুসিধান্ত ৩ । 
প্রমাণঃ
সুত্র ১ ও সুত্র ২ যোগ করি তাহলে
বা, 
বা, 
অনুসিধান্ত ৪ । 
সুত্র ১ ও সুত্র ২ বিয়োগ করে পাই ।
বা, 
বা, 
ঘন সংবলিত সূত্রাবলিঃ
সুত্র ১ । 
সুত্র ২ । 
সুত্র ১ এর প্রমাণঃ
সুত্র ২ এর প্রমাণঃ
অনুসিধান্ত 
প্রমাণঃ সুত্র ১ থেকে
অনুরূপভাবে 
উৎপাদকে বিশ্লেষণঃ
কোনো রাশি দুই বা ততোধিক রাশির গুণফলের সমান হলে, শেষোক্ত রাশিগুলোর প্রথমোক্ত রাশির উৎপাদক বা গুণনীয়ক বলা হয় ।
উৎপাদক নির্ণয়ের কতিপয় কৌশলঃ
ক) কোনো বহুপদীর প্রত্যেক পদে সাধারণ উৎপাদক থাকলে তা প্রথমে বের করে নিতে হয় । যেমনঃ 
খ) একটি রাশিকে পূর্ণ বর্গ আকারে প্রকাশ করে । যেমন,
একটি রাশি
একে বিশ্লেষণ করতে প্রথমে পূর্ণ বর্গ আকারে প্রকাশ করতে হবে ।
গ) একটি রাশিকে দুটি বর্গের অন্তররূপে প্রকাশ করে এবং
সুত্র প্রয়োগ করে ।
ঘ)
সূত্রটি ব্যবহার করে ।
এপদ্ধতিতে
আকারের বহুপদীর উৎপাদক নির্ণয় করা সম্ভব হয় যদি দুইটি পূর্ণসংখ্যা a ও b নির্ণয় করা যায় যেন, a + b = p এবং ab=1 হয় । এজন্য q এর দুটি সচিহ্ন উৎপাদক নিতে হয় যাদের বীজগাণিতিক সমষ্টি p হয় । q>0 হলে, a ও b একই চিহ্নযুক্ত হবে এবং q<0 হলে, a ও b বিপরীত চিহ্নযুক্ত হবে ।
ঙ)
আকারের বহুপদীর মধ্যপদ বিভক্তিকরণ পদ্ধতি ।
যদি 
অর্থাৎ
এবং
হয় ।
সুতরাং
এবং 
অথএব
আকারের বহুপদীর উৎপাদক নির্ণয় করতে হলে ac অর্থাৎ
এর সহগ এবং x বর্জিত পদের গুনফল্কে এমন দুইটি উৎপাদকে প্রকাশ করতে হবে যাদের বীজগাণিতিক সমষ্টি x এর সহগ b এর সমান হয় ।
জ) ভগ্নাংশযুক্ত রাশির উৎপাদক
ভাগশেষ উপপাদ্য (Remainder, , Theorem):
আমরা জানি ভাজ্য = ভাজক
ভাগফল + ভাগশেষ
এখন যদি আমরা ভাজ্যকে
, ভাগফলকে
, ভাগশেষকে r ও ভাজককে
দ্বারা সূচিত করি, তাহলে উপরের সুত্র থেকে পাই,
উভয়পক্ষে x=a বসিয়ে পাই ,
সুতরাং 
অথএব,
কে
দ্বারা ভাগ করলে ভাগশেষ হয়
. এই সুত্র ভাগশেষ উপপাদ্য নামে পরিচিত । অর্থাৎ ধনাত্মক মাত্রার কোনো বহুপদী
কে
আকারের বহুপদী দ্বারা ভাগ করলে ভাগশেষ কত হবে তা ভাগ না করে বের করার সুত্রই হল ভাগ শেষ উপপাদ্য । ভাজক বহুপদী
আকারের বহুপদী এর মাত্রা 1, ভাজক যদি ভাজ্যের উৎপাদক হয়, তাহলে ভাগশেষ হবে শুন্য । আর যদি উৎপাদক না হয়, তাহলে ভাগশেষ থাকবে এবং তা হবে অশূন্য কোনো সংখ্যা ।
প্রতিজ্ঞাঃ যদি
এর মাত্রা ধনাত্মক হয় এবং
হয়, তবে
কে
দ্বারা ভাগ করলে ভাগশেষ হয় 
অনুসিধান্তঃ
এর উৎপাদক হবে যদি এবং কেবল যদি
হয় ।
বাস্তব সমস্যা সমাধানে বীজগাণিতিক সুত্র গঠন ও প্রয়োগঃ
আগের অধ্যায়গুলোতে আমরা যে সুত্র অনুসিধান্ত স্বীকার্য নিয়ে আলোচনা করেছি তাঁর প্রয়োগ করে আমরা এই অধ্যায় এ বিভিন্ন রকম অঙ্ক করব ।
সমস্যা সমাধানের পদ্ধতিঃ
(ক) প্রথমেই সতর্কতার সাথে সমস্যাটি পর্যবেক্ষণ করে এবং মনেযোগ সহকারে পড়ে কোনগুলো অজ্ঞাত এবং কী নির্ণয় করতে হবে তা চিহ্নিত করতে হবে ।
খ) অজ্ঞাত রাশিগুলোর একটিকে যেকোনো চলক ( ধরি x ) দ্বারা সূচিত করতে হবে অতঃপর সমস্যাটি ভালভাবে অনুধাবন করে অন্যান্য অজ্ঞাত রাশিগুলোকে একই চলক x এর মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে ।
গ) সমস্যাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে বীজগাণিতিক রাশি দ্বারা প্রকাশ করতে হবে ।
ঘ) প্রদত্ত শর্ত ব্যবহার করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলোকে একত্রে একটি সমীকরণে পরকাশ করতে হবে ।
ঙ) সমীকরণটি সমাধান করে অজ্ঞাত রাশি x এর মান নির্ণয় করতে হবে ।
বাস্তব সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন সুত্র ব্যবহার করা হয় তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ
১) দেয় বা প্রাপ্য বিষয়কঃ দেয় বা প্রাপ্য, A=qn টাকা
যেখানে, q = জনপ্রতি দেয় বা প্রাপ্য টাকার পরিমাণ
n = লোকের সংখ্যা
২) সময় বা কাজ বিষয়কঃ
কয়েকজন লোক একটি কাজ সম্পন্ন করলে কাজের পরিমাণ,
যেখানে, q = প্রত্যেক একক সময়ে কাজের যে অংশ সম্পন্ন করে,
n = কাজ সম্পাদনকারীর সংখ্যা
x = কাজের মোট সময়
W = n জনে x সময়ে কাজের যে অংশ সম্পন্ন করে ।
৩) সময় ও দূরত্ব বিষয়কঃ
নির্দিষ্ট সময়ে দূরত্ব, d = vt
যেখানে, v = প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ
t = মোট সময়
৪) নল ও চৌবাচ্চা বিষয়কঃ
নির্দিষ্ট সময়ে চউবাচ্চার পানির পরিমাণ 
যেখানে
নলের মুখ খুলে দেওয়ার সময় চৌবাচ্চায় জমা পানির পরিমাণ
q = প্রতি একক সময়ে নল দিয়ে যে পানি প্রবেশ করে অথবা বের হয় ।
t = অতিক্রান্ত সময়
Q(t)= t সময়ে চৌবাচ্চায় পানির পরিমাণ ( পানি প্রবেশ হওয়ার শর্তে "+" এবং পানি বের হওয়ার শর্তে " - " চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে ) ।
৫) শতকরা অংশ বিষয়কঃ
p = br
যেখানে, b = মোট রাশি
r = শতকরা ভগ্নাংশ
%
p = শতকরা অংশ = b এর s%
৬) লাভ- ক্ষতি বিষয়কঃ
লাভের ক্ষেত্রে S=C(I+r)
এবং ক্ষতির ক্ষেত্রে, S=C(I-r)
যেখানে, S(টাকা ) = বিক্রয়মূল্য
C(টাকা) = ক্রয়মূল্য
I = লাভ বা মুনাফা
r = লাভ বা ক্ষতির হার
৭) বিনিয়োগ- মুনাফা বিষয়কঃ
সরল মুনাফার ক্ষেত্রে,
I = Pnr টাকা
A = P+I=P+Pnr= P(1+nr) টাকা
চক্রবৃদ্ধি মুনাফার ক্ষেত্রে,
যেখানে, I= n সময় পরে মুনাফা
n = নির্দিষ্ট সময়
P = মূলধন
r = একক সময়ে একক মূলধনের মুনাফা
A = n সময় পরে মুনাফাসহ মূলধন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন